ঢাকা , রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫ , ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

​ভাস্কর হামিদুজ্জামান খানের চিরবিদায়

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ২০-০৭-২০২৫ ০১:৪৩:১১ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ২০-০৭-২০২৫ ০১:৪৩:১১ অপরাহ্ন
​ভাস্কর হামিদুজ্জামান খানের চিরবিদায় ​ফাইল ছবি
দেশের খ্যাতিমান চিত্রশিল্পী ও ভাস্কর হামিদুজ্জামান খান মারা গেছেন। রোববার (২০ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। পরিবারের সদস্যরা মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন।

গত সপ্তাহে ভাস্কর হামিদুজ্জামান খান গুরুতর অসুস্থ হন। রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তিনি নিউমোনিয়া ও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে প্রথমে আইসিইউ, পরে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়।

হামিদুজ্জামান খান ১৯৪৬ সালের ১৬ মার্চ কিশোরগঞ্জের সহশ্রাম গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭০ থেকে ২০১২ পর্যন্ত তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। ফর্ম, বিষয়ভিত্তিক ও নিরীক্ষাধর্মী ভাস্কর্যের জন্য সুপরিচিত ভাস্কর হামিদুজ্জামান খান।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনারা হামিদুজ্জামানকে আটক করলেও পরে তিনি ছাড়া পান।২৭ মার্চ ঢাকার নিউ মার্কেট এলাকায় তিনি অসংখ্য মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। যুদ্ধের নৃসংশতা এবং মানুষের অভাবনীয় দুর্দশা তাকে প্রবলভাবে নাড়া দেয়। সে কারণে স্বাধীনতার পর প্রথম দুই দশকে তার অধিকাংশ ভাস্কর্যের বিষয় ছিল মুক্তিযুদ্ধ।

১৯৭২ সালে ভাস্কর আবদুর রাজ্জাকের সঙ্গে তিনি ‘জাগ্রত চৌরঙ্গী’ নির্মাণে কাজ করেন। জয়দেবপুর চৌরাস্তায় এটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণায় নির্মিত প্রথম ভাস্কর্য।

১৯৭৬ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের অনুপ্রেরণায় তিনি নির্মাণ করেন ‘একাত্তর স্মরণে’ ভাস্কর্য। ১৯৮৮ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় রাজধানী সিউলে অলিম্পিক ভাস্কর্য পার্কে ‘স্টেপস’ ভাস্কর্য স্থাপন করেন। এর পর আন্তর্জাতিক পরিসরেও তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। ক্যানভাসে হামিদুজ্জামান খান জলরঙ ও অ্যাক্রেলিকে বিমূর্ত ধারায় ফুটিয়ে তোলেন নিসর্গ ও মানবশরীর।

সিলেট ক্যান্টনমেন্টে ‘হামলা’, বঙ্গভবনে ‘পাখি পরিবার’, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সংশপ্তক’ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে ‘শান্তির পায়রা’- তার উল্লেখযোগ্য ভাস্কর্য। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ‘হামিদুজ্জামান খান ১৯৬৪-২০১৭’ শিরোনামে তার রেট্রোস্পেকটিভ প্রদর্শনীর আয়োজন করে।
 
এ শিল্পীর একক প্রদর্শনী হয়েছে ৪৭টি। হামিদুজ্জামান ২০০৬ সালে শিল্পকলায় অবদানের জন্য একুশে পদক লাভ করেন। ২০২২ সালে বাংলা অ্যাকাডেমি ফেলো নির্বাচিত হন।

বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/এইচবি/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ